প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ২৯, ২০২১ সময়ঃ ৮:২৯ অপরাহ্ণ
স্টাফ রিপোর্টার, দিগন্তবার্তা, ২৯ জুলাইঃ
ময়মনসিংহের ভালুকায় নিজের বসতভিটায় ঘর করতে গিয়ে অনেক নিরিহ বসতিকে বনবিভাগের অসাধূ ব্যক্তিরা মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েও অবশেষে মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ভালুকা ও উথুরা রেঞ্জের একাধিক ব্যক্তি এসব অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগ গিয়াস উদ্দিন নামে এক ভূূূূক্তভোগি মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, যদি কোন ব্যক্তি তার পৈত্রিক বা ক্রয়সূত্রেপ্রাপ্ত জমিতে বসত ঘর নিমার্ণ শুরু করেন। সাথে সাথেই তাদের সোর্সরা বনবিভাগের লোকদের খবর দেয়। পরে বনবিভাগের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে বাঁধা প্রদান করেন। এসময় তাদের নিয়োগপ্রাপ্ত সোর্স দিয়ে রফা করা হয় কতো টাকা দেয়া হলে ঘর করতে অনুমোদন দেয়া হবে। বনবিভাগের অসাধূ ব্যক্তিরা মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করলেও দিতে না পারায় যা দেয়া হয়, তাই তারা নিয়ে নেয়। কিন্তু দেখা যায় দুই বা আড়াই মাস পর আদালত থেকে মামলার নোটিশ নিয়ে হাজির। ভালুকা ও উথুরা রেঞ্জে এমন অভিযোগ অনেকের। তাদের চাহিদা মতো টাকা না দেয়ায় দুই মাস পর মামলার নোটিশ নিয়ে বাড়িতে হাজির। পরেই জানতে পারে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এমনও আছে, কোন নিমার্ণকারী মোটা অঙ্কের টাকা দিলো, দুই মাস পর মামলার নোটিশ নিয়ে বাড়িতে হাজির। তারপরও আরো মামলার হুমকী দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা।
উপজেলরা উথরা রেঞ্জের আওতায় চামিয়াদী গ্রামের একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার সর্তে জানান, তাদের ঘর নিমার্ণকালে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আজাহার আলীর মাধ্যমে উথুরা রেঞ্জের বনপ্রহরী লোকমান ও নুরুল ইসলামকে টাকা দেয়। কিন্তু দুই মাস পর তাদের নামে বনবিভাগের দায়েরকৃত মামলার নোটিশ আসে। তাছাড়া টাকা না দেয়ায় বনবিভাগের ৩২২ নম্বর দাগের সাথে সিএস ৩৩২ নম্বর দাগে ঘর করায় আজগর আলীর ছেলে আবুল হোসেনের নামে মামলা দেয়া হয়। তাছাড়া কৈয়াদী গ্রামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে উথুরা রেঞ্জের বনপ্রহরী নুর আহম্মেদ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েও বিট অফিসারকে দিয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বনআইনে মামলা দেন। দুই মাস পর যখন মামলার নোটিশ বাড়িতে যায়, পরে আবারো মামলা দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা দাবির অভিযোগ উঠে।
উপজেলার ভালুকা রেঞ্জের আওতায় হবিরবাড়ি এলাকায় এমন অভিযোগ অনেকের। বর্তমান বিট কর্মকতার্ দেওয়ান আলীর বিুরুদ্ধে এসব অভিযোগ। তিনি তার লোক মারফত ঘর নিমার্তার কাছ থেকে টাকা নিয়েও অনেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে, এমনও আছে, উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিন ও তার ছেলেদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এবং মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গিয়াস উদ্দিন জানান, তার এক ভাই ঘর নির্মান করছেন, টাকা কম দেয়ার কারণে আমাকে ও আমার ছেলেদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। তবে প্রভাবশালীদের ব্যাপারে ভিন্ন, বনবিজ্ঞিপ্তিত জমি দখলের উদ্দেশে কলাগাছের কয়েকশ চারা রোপনসহ সাইনবোর্ড ও ঘর নির্মাণ করার পর তা উচ্ছেদ ও ভেঙে নিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা বা আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এসব ব্যাপারে বিট অফিসার দেওয়ান আলী জানান, বিনা কারণে কাওকে মামলা দেয়া হয়নি, তাছাড়া বনবিজ্ঞপ্তিত জমিতে অবৈধভাবে রোপনকৃত কলা গাছের চারা উপড়ে ফেলা ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হলেও নাম ঠিকানা জানতে না পারায় দখলকারিদের বিরুদ্ধে আইনি কোন ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।
উথুরা রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার হারুন অর রশিদ জানান, আমি এই রেঞ্জে যোগদান করেছি, দুই মাস আগে। আমি আসার পর এসব ঘটনা ঘটেনি। যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা আগের রেঞ্জার থাকাকালিন সময়ে ঘটেছ।