প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ৭, ২০২১ সময়ঃ ১১:০৪ পূর্বাহ্ণ
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক:-
ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের বনের স্বার্থ পরিপন্থী ভূমিকার কারণে প্রায় বেহাত হয়ে যাওয়া ৪২ শতাংশ বনভূমি কয়েক দশক পর নিয়ন্ত্রণে এনেছে বনবিভাগ। গাজীপুর মহানগরে অবস্থিত জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের আড়াইশপ্রসাদ মৌজার গজারিয়া পাড়ায় প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের এ জমিতে মঙ্গলবার বাগান সৃজন করেছে ঢাকা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
বন বিভাগ সূত্র জানা যায়, জাতীয় উদ্যান রেঞ্জের আড়াইশপ্রসাদ মৌজার ২২৬ নম্বর সিএস দাগের সমস্ত জমি ছিল বন বিভাগের। পরবর্তীতে রিভিশনাল সার্ভে বা আরএস জরিপের সময় ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগের সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২২৬ নম্বর সিএস দাগকে কয়েক খন্ডে বিভক্ত করে ব্যক্তি মালিকানার নামেও রেকর্ডভুক্ত করে। তবে সাবেক ওই দাগের বেশ কিছু জমি আরএস ৪৫৫, ৪৫৬ ও ৪৫৭ নম্বর দাগে বন বিভাগের নামেও রেকর্ডভুক্ত করা হয়। সিএস দাগভূক্ত বনবিভাগের উক্ত জমি আরএস জরিপে ব্যক্তিমালিকানায় রেকর্ডভুক্ত করতে গিয়ে নকশা প্রণয়নে জটিলতার সৃষ্টি হয়। এতে ৪২ শতাংশ বনভূমি ব্যক্তি মালিকানার নামে রেকর্ড হওয়া জমির মাঝখানে রেখেই নকশা প্রণয়ন হয়। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ছিটমহলের মতো বনভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে উক্ত ৪২ শতাংশ জমি। বনভূমি থেকে আলাদা হয়ে থাকা উক্ত জমির ওপর বিভিন্ন মহলের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে। এমনকি জনৈক ফখরুল ইসলাম সাবেক ওই সিএস দাগের আরএস খতিয়ানভুক্ত ব্যক্তিমালিকানা কয়েক একর জমি কিনে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে ফেলেন। এতে বনভূমির সিএস ২২৬ নম্বর দাগের অবশিষ্ট ৪২ শতাংশ জমিও বনভূমি থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রায় বেহাত হয়ে যাচ্ছিল। এরইমধ্যে বনবিভাগের আপত্তির কারণে ২০১৮ সালে ফখরুল ইসলাম গাজীপুর জেলা প্রশাসক বরাবর সীমানা নির্ধারণের আবেদন করেন। কিন্তু সীমানা নির্ধারণের নামে বনভূমি বেহাতের আশঙ্কা থাকায় এবং এ সংক্রান্তে আরো বিভিন্ন জটিলতা বিদ্যমান থাকায় জেলা প্রশাসন পরবর্তীতে এব্যাপারে কেনো পদক্ষেপ নেয়নি। এ অবস্থায় ৪২ শতাংশ বনভূমি ছিটমহলের মতো এক অনিশ্চিয়তার মধ্যে অভিভাবকহীন ছিল। ফলে সম্প্রতি পাশের জমির আরএস রেকর্ডভূক্ত মালিকপক্ষের সঙ্গে ঘরোয়া আলোচনার মাধ্যমে ওই ৪২ শতাংশ জমিতে বনায়নের উদ্যোগ নিল বন বিভাগ।
স্থানীয় বাউপাড়া বিট কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজল তালুকদারের নির্দেশে বনায়নের এ উদ্যোগ নেয়া হয়। মঙ্গলবার বাগান সৃজনের সময় সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ, জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কাজী নাজমুল হকসহ বাউপাড়া বিটের স্টাফরা উপস্থিত ছিলেন।