বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ এপ্রিল ১৯, ২০২২ সময়ঃ ২:৫০ অপরাহ্ণ

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ), ১৯ এপ্রিল।।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বহুলী তমিজ উদ্দিন নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টি ১৯৮৬ সালে এমপিওভূক্ত হয়। প্রথম থেকেই বিদ্যালয়টিতে কোন শিক্ষার্থী না থাকলেও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই শিক্ষক কর্মচারীরা দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে সরকারী সুবিধা ভোগ করে চলেছেন। শুধু তাই নয় মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে মোটা অঙ্কের সুবিধা নিয়ে একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ বাণিজ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৮৪ সালে উপজেলার বহুলী গ্রামের সমাজসেবক  ও শিক্ষানুরাগী প্রয়াত আব্দুল বারেক চৌধুরী তমিজ উদ্দিন নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়টির নামে এক একর জমি দান করেন। পরে বিদ্যালয়টি ১৯৮৬ সালে এমপিওভূক্ত হয় (যান ইন নম্বর-১১১২৫৯)। প্রথমদিকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী থাকলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট ও যোগ্য শিক্ষক না থাকায় বর্তমানে শিক্ষার্থী ছাড়াই চলছে তার কার্যক্রম। সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, একটি লম্বা টিনসেট হাফবিল্ডিং ঘর, দরজা-জানালাবিহিন, নেই কোন পার্টিশন, কয়েকটি বেঞ্চ রয়েছে। একপাশে ছোট একটি রুম অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অপর একটি ছোট রুমের একপাশে প্রায় ২০০ সেট নতুন বই মেঝেতে পড়ে আছে। শিক্ষার্থী না থাকায় বইগুলো এভাবেই ফেলে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বালিকা বিদ্যালয় হলেও দু’টি বেঞ্চে বেশ কয়েকজন ছেলে মেয়ে বসে আছে। কারো সামনে বই আছে, আবার কারো সামনে কোন বই নেই। তাদের সাথে কথা হলে জানা যায়, তারা সকলেই পাশের আমিরাবাড়ি স্কুলের শিক্ষার্থী। কেনো তোমরা এই স্কুলে জানতে চাইলে, তারা জানায়, তাদেরকে কিছু সময়ের জন্য এই স্কুলের শিক্ষকরা এনেছেন।
অফিস কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, জুনিয়র সহকারী শিক্ষক মনিরুজ্জামান, প্রাথমিক শিক্ষক ফয়জুন্নাহার ও আতিকুল ইসলাম এবং চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নাছিমা খাতুন ও সবুজ মিয়া বসে আছেন। প্রধান শিক্ষকের চেয়ার খালি। প্রধান শিক্ষক কে এবং তিনি কোথায় জানতে চাইলে, তারা জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে রোকসানা খাতুন দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ও অফিস সহকারী রীমা আক্তার ভালুকায় শিক্ষা অফিসে গেছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন পূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নৈশ প্রহরী পদে আরাফাত নামে একজনকে ও নিরাপত্তাকর্মী পদে কামরুজ্জামান নামে অপর একজনকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। তবে তারা এখনো এমপিওভূক্ত হয়নি।
বিদ্যালয়ের জমি দাতার মেয়ের জামাতা কামরুল হাসান পাঠান কামাল পাঠান, আমার শ^শুর স্কুলটির জন্য এক একর জমি দান করলেও প্রতিষ্ঠানে কেউ চাকরী করেনি। সম্প্রতি আমার শ^শুরের এক নিকট আত্মীয়কে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী পদে নেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলে, মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়।
বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সফিউল আলম লিটন তার সময়ে নৈশ প্রহরী ও নিরাপত্তাকর্মী পদে নিয়োগ দেয়ার কথা স্বীকার করে জানান, করোনার কারণে বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকসান খাতুন জানান, কিছুদিন হলো আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছি। প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১৮২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। চেষ্টা করবো শিক্ষার্থী বৃদ্ধিসহ বিদ্যালয়টি পরিপূর্ণভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জানান, বহুলী তমিজ উদ্দিন নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে যে শিক্ষার্থী নেই তা তিনি শুনেছেন এবং ইতোপূর্বে দুইবার পরিদর্শণ করে একদিন ৭ জন ও আরেকদিন ১৭ জন শিক্ষার্থী পেয়ে মৌখিকভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষেকে জানিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৮ সালের পর বিদ্যালয়টির কেনো নবায়ন নেই, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা খাতুন জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com