বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ এপ্রিল ১৩, ২০২২ সময়ঃ ১:৩৮ অপরাহ্ণ

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ),১২ এপ্রিল।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা), গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে টাকা ((কাবিটা) প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কোন কোন প্রকল্পের অস্তিত্ব খোঁজে পাওয়া যায়নি, এমনকি কোন কোন প্রকল্পে নামমাত্র কাজ করে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) যোগসাজসে বরাদ্দকৃত সিংহভাগ টাকা পকেটস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থ বছরে প্রথম পর্যায় (উন্নয়ন) কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ৫৩ টি প্রকল্পের আওতায় তিন মেট্রেকটন করে প্রায় ১৬০ মেট্রিকটন খাদ্য শস্য (চাল) বরাদ্দ দেয়া হয়। গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ৬৫ টি প্রকল্পের আওতায় ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৬ টাকা ও কাজের বিনিময়ে টাকা ((কাবিটা) ২৯ টি প্রকল্পের আওতায় ৭৫ লাখ, ৫৮ হাজার ৯২৪ টাকা এবং আবারো কাবিখার ৩২ টি প্রকল্পের আওতায় ১৫৯.৯৪৪ মেট্রিকটন খাদ্য শস্য (গম) বরাদ্দ দেয়া হয়।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের নারাঙ্গী মহেন্দ্র বর্মণের বাড়ি হতে আব্দুল ফকিরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি ফ্লাট সলিং করার জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে ওই রাস্তায় ইটের কাজ করা তো দুরের কথা সামন্য মাটি ফেলে সমুদয় টাকা উত্তোলন করে পকেটস্ত করা হয়েছে। প্রকল্প সভাপতি ইউনিয়নের নারী সদস্য শেফালী রানী ওই রাস্তায় ২৫ হাজার টাকার মাটির কাজ করেছেন বলে স্বীকার করে বলেন, ফোনে নয়, সাক্ষতে কথা হবে।
উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের চাঁনপুর পাকা রাস্তা থেকে রুস্তম তালুকদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি এইচবিবি করনের জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও ৫০ থেকে ৬০ ফুট রাস্তা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ফ্লাট সলিং করা হয়েছে। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার ইউসুফ জানান, বিষয়টির ব্যাপারে চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন। তেমনি ভায়া মল্লিকবাড়ি পাকা রাস্তা থেকে মজিবর চেয়ারম্যানের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি ফ্লাট সলিং করনের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও কিছু ইট দিয়ে নামমাত্র কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভালুকা সদর ইউনিয়নের উপজেলার বাঁশিল দয়াল মার্কেট থেকে করিমের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য তিন টন চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও এক টুকরা মাটির কাজও করানো হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান। নাম প্রকাশ না করার সর্তে এক ব্যক্তি জানান, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই পর্যন্ত এক কুদাল মাটির কাজও করা হয়নি এ রাস্তায়। এ ব্যাপারে ওয়ার্ড মেম্বার সোহেল জানান, টিআর বরাদ্দগুলো তো খাওয়ার জন্যই। তেমনি একই ইউনিয়নের মেহেরাবাড়ি মেইনরোড থেকে আমছুর মুন্সির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ও আজিজ পুলিশের বাড়ি থেকে শফিকুল শিকদারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা দু’টিতে সংস্কারের জন্য তিন মেট্রিকটন করে চাল বরাদ্দ দেয়া হলেও নামমাত্র কাজ করা হয়েছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
তেমনি সরেজমিন খোঁজ নিতে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের প্রায় বেশিরভাগ টিআর, কাবিটা ও কাবিখা প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে স্বস্ব এলাকার একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, সুষ্টু তদন্ত হলে দুর্নীতির আসল চিত্র দেখা যাবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি টন চালের সরকারী দর ৪৭ হাজার ২৫৯.৬৬১ টাকা ও গম ৩৩ হাজার ৬৭০.৮০৩ টাকা ধরা হলেও স্থানীয় ডিলারদের কাছে চাল ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা ও গম ১২ থেকে ১৩ হাজার টাকার বেশি বিক্রি করা সম্ভব হয়না। অফিসের খরচসহ একিন আলী নামে জনৈক এক ব্যক্তিকে আরো ৩/৪ হাজার টাকা দিয়ে মাষ্টাররোল করিয়ে যে পরিমাণ টাকা থাকে তা দিয়ে প্রকল্পের পুরো কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠেনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আবুল কালাম আজাদ জানান, খোঁজ নিয়ে যে সকল প্রকল্পে অনিয়ম পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশিষ্ট ডিও বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com