প্রকাশিত হয়েছেঃ এপ্রিল ১২, ২০২২ সময়ঃ ৭:৪৪ অপরাহ্ণ
মোঃ জাকির হোসেন ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি।।
ময়মনসিংহের শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার চরাঞ্চলে চরঈশ্বরদিয়া, চর খরিচা, সিরতা, পরাণগঞ্জ ও বোররচর এলাকায় শসার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। এবার শসার বাজার দর ভালো থাকায় উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে শসা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন চাষী।
রমজান মাসের শুরুতে শসার ব্যাপক চাহিদা ও বাজার থাকার কারণে চাষিরা ব্যাপক লাভের মুখ দেখছেন। রমজানের শুরুতে শসার বাজার দর ছিল প্রতিমণ ১৬০০ থেকে ২০০০ টাকা। সকল চাহিদা মিটিয়ে রমজানের মাঝপথে শসার বাজারদর ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শত টাকা থাকলেও সামনে ঈদে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে শসার।
ময়মনসিংহ সদর উপজেলা ছাড়াও শসার উৎপাদন হয় জেলার মুক্তাগাছা,ত্রিশাল গৌরীপুর উপজেলায় । সবচেয়ে বেশি শসার অবাধ হয় তারাকান্দা ও ফুলপুর উপজেলায় । তারাকান্দা উপজেলার বালিখা,কামারিয়া রামপুর, হরিয়াগাই, গোপালপুর, বানিহালা,চংনাপাড়া,কাকনী এলাকায় সবচেয়ে বেশি শসার অবাধ হয়। এসব এলাকা থেকে চাষীরা শসা বিক্রি করার জন্য উপজেলা পাইকারি গোয়াতলা শসার বাজারে নিয়ে আসে। সরোজমিনে শসার বাজারে গিয়ে দেখা যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। শসা বাছাই, প্যাকেট করা এবং গাড়ি লোড করা হচ্ছে। এখান থেকে শসা ঢাকাসহ সারাদেশে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।
শসার বাজারের এরশাদুল ও আলম নামে ব্যবসায়ী জানায়, দুদিন আগেও শসার বাজার ১হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মন ক্রয় বিক্রয় হয়েছে কিন্তু এখন বাজার দর একটূ্ কমেছে। এখান থেকে শসার ঢাকা কারওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম, মিরপুর চাঁদপুর সহ সারাদেশে সরবরাহ হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এ বাজারে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার মণ শসা আমদানি হয়। আশপাশের এলাকা থেকে এসব শসা বাজারে বিক্রি করার জন্য চাষিরা নিয়ে আসে।
বাজারের শসা বিক্রি করতে আসা রামপুর চারিয়া এলাকার চাষী আব্দুল গফুর জানান, তিনি ৬০ শতাংশ জমিতে শসা চাষ করেছেন। আজকে তিনি ৪৫ মন বিক্রি করতে আসছে। তিনি শসা বিক্রি করে লাভবান। তিনি ২৮ বছর ধরে শসা চাষ করেন। শসা চাষ করার সময় ক্ষেতে অনেক সময় পোকামাকড় ও রোগাক্রান্ত হয়। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতা পেলে তাদের সুবিধা হত । অনেক সময় রোগ আক্রান্ত কারণে শসা গাছ মারা যায়। তাদের সহযোগিতা পেলে ক্ষতি থেকে তারা রক্ষা পেত। এবং অনেক নতুন চাষি এ শসা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করতো।
এ বিষয়ে তারাকান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার রকিব আল রানা বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকের অভিযোগ সঠিক না, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা যারা আছেন তারা কৃষকের সাথে সমন্বয় করে সঠিক দিক-নির্দেশনা দেওয়ার কারণে আজ এ শসার ব্যাপক ফলন হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তারাকান্দা এবার শসার উৎপাদন সন্তোষজনক। তারাকান্দায় যে শসা উৎপাদন হচ্ছে বর্তমান বাজার ব্যবস্থা কৃষকরা সঠিক দাম পাচ্ছেন।
তারাকান্দা উপজেলার এবার ২৫০ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ করা হয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকরা সঠিক পরামর্শ সাহায্য ও সহযোগিতা পেলে শসা চাষে নতুন করে অনেকে আগ্রহী হবে। এতে শসার উৎপাদন আরো বাড়বে বলে আশা করেন স্থানীয় শসার ব্যবসায়ী ও জনসাধারণ।