বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ মার্চ ১৮, ২০২২ সময়ঃ ১০:০১ অপরাহ্ণ

গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

গাজীপুর ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সাঁটানো একটি ইসলামি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের রঙ বেরঙের পোস্টারে লেখা ছিল ‘অবশ্যই যথাসময়ে উপস্থিত হয়ে আপনার আসন ও খাবারের টোকেন বিনা মূল্যে সংগ্রহ করবেন।’ কিন্তু ওই অনুষ্ঠানে কোন খাবার বা টোকেন দেয়া হয়নি। অনুষ্ঠানে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অভুক্ত থেকে ফিরে গেছেন বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ চার শতাদিক দর্শক শ্রোতা। বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি শুক্রবার সকালে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজার সংলগ্ন রাবেতা মাঠে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওলামালীগের একংশের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ইসমাইল হোসাইন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারীরা জানান, বিভিন্ন এলাকায় এ অনুষ্ঠানের রঙ বেরঙের পোস্টার দেখে তারা অনুষ্ঠানস্থলে ছুটে আসেন। সকাল ৮টা থেকে জুমার আগ পর্যন্ত চলা এ অনুষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় কোন আলেম ওলামাকে দেখতে না পেয়ে তারা হতাশ হন। আলোচিত পোস্টারের সাথে অনুষ্ঠানমঞ্চের ব্যানারেরও মিল ছিল না। ব্যানারের একপাশে ছোট অক্ষরে লেখা ছিল ‘সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আলেম ওলামাদের করণীয় কি ? শীর্ষক আলোচনা সভা’। অথচ অনুষ্ঠানের কোন পোস্টারেই তা লেখা ছিল না। ব্যানারে আলোচ্যসূচীর চেয়ে প্রধান বক্তা ড. মুফতী মাওলানা মুহাম্মদ কাফীলুদ্দীন সরকার সালেহী ও প্রধান অতিথি হিসাবে মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইনের নাম গুরুত্বসহ মোটা অক্ষরে লেখা ছিল। তবে তাদের বক্তব্যে সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস প্রসঙ্গ প্রাধান্য ছিল না। পুরো অনুষ্ঠান জুড়েই ছিল বিভিন্ন শিল্পীদের ইসলামিক সংগীত পরিবেশেন।
এদিকে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, মাওলানা ইসমাইল হোসাইন এই অনুষ্ঠানের নামে সরকারি পর্যায় ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে মোটা অংকের দান-অনুদান সংগ্রহ করেন। অথচ অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল নির্মাতাসহ সংশ্লিষ্টদের বিল পরিশোধ না করেই তিনি চলে যান বলেও অভিযোগ উঠেছে।
কে এই ইসমাইল ঃ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বশিক্ষিত হয়েও নিজেকে বিশিষ্ট আলেম দাবী করেন সাবেক ওলামালীগের একাংশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বর্তমানে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসাইন। নামের আগে তিনি ‘মাওলানা’ শব্দও ব্যবহার করেন। ইসমাইল হোসাইন একসময় হলুদ, মরিচ ও ধনিয়ার গুড়ো প্যাকেট করে দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন। থাকতেন গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব গাজীপুরায় একটি ছোট্ট রুম ভাড়া নিয়ে। পরবর্তীতে তিনি ওলামালীগে যোগ দিলে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়। তিনি এখন অঢেল সম্পত্তির মালিক। থাকেন রাজধানীর উত্তরা মডেল টাউনে। বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন। টঙ্গীসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে তার একাধিক বাড়ি ও স্ত্রী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার ঘনিষ্টজনরা মন্তব্য করে বলেন, ওলামালীগে যোগ দিয়ে ইসমাইল যখন দেখলেন রাজনীতিতে রাতারাতি ভাগ্যের চাকা ঘুরে, তখন তিনি নিজেই ‘বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামিক পার্টি’ নামের আলাদা রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেন। তিনি নতুন এই সংগঠনের মাধ্যমে মূলধারার ইসলামিক দলগুলোর বিরুদ্ধাচারণ ছাড়াও বিরোধীদলগুলোর সমালোচনা করে সরকারের কাছে নিজের গুরুত্ব তুলে ধরে আখের গোছাচ্ছেন।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মাওলানা ইসমাইল হোসাইন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনুষ্ঠানে গ্রæপ ভিত্তিক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রত্যেককে খাবারের পরিবর্তে নগদ টাকা দেয়া হয়েছে।
#

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com