প্রকাশিত হয়েছেঃ মার্চ ১৬, ২০২২ সময়ঃ ১২:১৮ অপরাহ্ণ
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রতারণার মাধ্যমে স্বাক্ষর নিয়ে মানসিক রোগী ফজলুল হকের (৬০) কোটি টাকা মূল্যের এক একর জমি সাবকবলা দলিলের মাধ্যমে লিখে নেয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ভালুকা সাবরেজিস্ট্রার আসমা আক্তারসহ ৭ জনকে বিবাদি করা হয়েছে। (মামলা নম্বর-৫৬)। ঘটনার পর প্রতারকের বিচার দাবিতে স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন।
জমির মালিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পাড়াগাঁও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ডা. মৃত শহিদুল্লাহর ছেলে মানসিক রোগী ফজলুল হকের পাড়াগাঁও মৌজার সিএস ১০২৩ নম্বর দাগে ও বিএস ১৭১৬৮ নম্বর দাগে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্য উল্লেখ করে এক একর জমি সাবকবলা রেজিস্ট্রি করে লিখে নেয়া হয়েছে। গত ১২ জানুয়ারী হবিরবাড়ি গ্রামের মৃত হাশেম আলীর ছেলে মুরাদ হোসেন বিপ্লব দলিল লেখক মনিরুল ইসলামের (সনদ নম্বর-৬১২০) মাধ্যমে স্থানীয় ইউনিভার্সাল ওয়াশিং এন্ড গার্মেন্ট লিমিটেডের পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতিকুল আলম চৌধুরীর নামে (দলিল নম্বর-৩৫৪) কমিশনের মাধ্যমে দলিলটি রেজিষ্ট্রি হয়। ঘটনার পর এলাকাবাসি ওই প্রস্তাবিত কোম্পানীর গেইটে মুরাদ হোসেন বিপ্লবের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, মুরাদ হোসেন বিপ্লব এলাকার একজন আলোচিত জমির দালাল। এর আগেও তিনি হবিরবাড়ি মৌজার ১৫৪ নম্বর দাগে লবনকোঠা এলাকায় এক শিল্পতিকে জমি কিনে দেয়ার কথা বলে বনভূমি জবর দখলের ঘটনা ঘঠিয়েছিলো। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সেল ওয়াশিং এন্ড গার্মেন্ট লিমিটেডের জমি কিনে দেয়ার কাজ করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পাগল ফজলুর (স্থানীয়ভাবে পরিচিত) প্রায় কোটি টাকা মূল্যের জমি কৌশলে লিখে নিয়েছেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে কোম্পানীর গোইটের সামনে এলাকার কয়েক’শ লোক প্রতারক ও জমির দালাল বিপ্লবের বিচার চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও গত শুক্রবার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সিডষ্টোর বাসস্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পাঠলন করা হয়।
জমির মালিক ফজলুল হক জানান, তাকে বিয়ে করাবে বলে কাগজে স্বাক্ষর নেয়। পরে জানতে পারেন তার এক একর জমি লিখে নিয়েছে।
ফজলুল হকের ভাই আজিজুল হক জানান, আমার ভাইয়ের জমি প্রতারণার মাধ্যমে এক একর জমি রেজিস্ট্রি দলিল করে নিয়েছে। আমার ভাইয়ের এনআইডি নম্বরও গড়মিল ছিলো। এ ব্যাপারে ভাইয়ের পক্ষে ভালুকা সাবরেজিস্ট্রার আসমা আক্তার, গ্রহীতা আতিকুল আলম চৌধুরী, দলিল লেখক মো: মনিরুল ইসলাম, কামাল হোসেন, রুকুনুজ্জামান, জাহানারা বেগম ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে জেলা প্রশাসককে বিবাদি করে ময়মনসিংহ বিজ্ঞ তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দলিল বাতিল চেয়ে মামলা দায়ের করেছি।
অভিযুক্ত মুরাদ হোসেন বিপ্লবের মোবাইলে কথা হলে, তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়।
ভালুকা সাবরেজিস্ট্রার আসমা আক্তার জানান, দলিলটি কমিশনের মাধ্যমে হয়েছে। মানসিক রোগী কিনা তা তাৎক্ষনিক বুঝা যায়নি। তবে জমির কাগজপত্র ঠিক ছিলো।