বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ মার্চ ৬, ২০২২ সময়ঃ ৫:৪০ অপরাহ্ণ

এম এস মনির, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান।।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে চারদিনের ব্যবধানে দেশের অন্যতম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ে আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। রকমভেদে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পণ্যের দাম। একইসঙ্গে পেঁয়াজ, আটা, ময়দা, তেল এবং মসলার দামও বেড়েছে সমানতালে।

পাইকারি বাজারে দাম বাড়ার কারণে প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। ইতোমধ্যে ব্যাংক থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনে এলসি খোলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে ভোগ্যপণ্যের বাজার আরও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গত সপ্তাহে ছোলা রকমভেদে মণপ্রতি ২১০০ থেকে ২২০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। একইভাবে সরিষা মণপ্রতি ২৫০০-২৬০০ টাকা দরে বিক্রি হলেও তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৩৫০ টাকা থেকে ৩৭০০ টাকায়। গম মণপ্রতি ২০০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৭০ থেকে ১২৫০ টাকা। রাশিয়া থেকে আমদানি হওয়ায় সর্বোচ্চ ২০০ টাকা বেড়েছে গমের দাম।

মটর কেজিপ্রতি ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। জিরা কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকা। মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা, লবঙ্গের কেজি ১৭০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৭০ টাকা, গোলমরিচ কেজিপ্রতি ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা, কিশমিশ কেজিপ্রতি ৭৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩২৭ টাকা।

যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে আরও ভয়াবহ হবে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় সরকার ও ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

খাতুনগঞ্জ আড়ৎদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, ‘সাদা সরিষা, লাল সরিষা মানভেদে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বেড়েছে। মটর ৪০ টাকা থাকলেও এখন ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শুধুমাত্র ইউরোপকেন্দ্রিক আমদানি পণ্যের দাম বেড়েছে যুদ্ধের কারণে। কিন্তু তেলজাতীয় পণ্যের দাম বাড়ার কারণ বিশ্ববাজারে দাম বৃদ্ধি।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়ৎদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘ব্যাংক থেকে রাশিয়া-ইউক্রেনে এলসি খুলছে না। তাই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাজারে। অল্প সময়ের মধ্যে এ যুদ্ধ শেষ হলেও এর প্রভাব বেশ কিছুদিন থাকবে বাজারে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের আড়ৎদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, পণ্যের দাম রকমভেদে কেজিপ্রতি বেড়েছে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকা পর্যন্ত।’

খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগির আহমেদ বলেন, ‘ইতোমধ্যেই খাতুনগঞ্জে সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে আমদানি-রপ্তানিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রভাব পড়বে সব আমদানি-রপ্তানি পণ্যে। সামনে যে সংকট দেখা দেবে তা মোকাবিলার জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।

বাংলাদেশ কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সভাপতি নাজের হোসেন বলেন, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা শুধু অজুহাত খোঁজেন। যে কোনো অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করতে পারলেই তাদের সিদ্ধিলাভ হয়। অথচ আমাদের দেশে আমদানির পণ্যের পর্যাপ্ত স্টক আছে। এরপরও দাম বৃদ্ধি করার কোনো মানে হয় না। দাম বৃদ্ধি করা হলে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোো প্রতিনিয়ত মনিটরিং এর মাধ্যমে দ্রব্যমূল্যয নিয়ন্ত্রণে কাজ করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

ভোক্তাদের অভিমত নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে পাইকাররা অধিক মুনাফার লোভে যুদ্ধের ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনই যদি এর লাগাম টেনে না রাখা হয় আগামী রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম আরো বাড়িয়ে দিবে এরা।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com