বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ জানুয়ারি ২৫, ২০২২ সময়ঃ ২:৫৩ অপরাহ্ণ

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ),২৫ জানুয়ারীঃ
ময়মনসিংহের ভালুকার কাদিগড় জাতীয় উদ্যানের এক কিলোমিটারের মধ্যে উপজেলার বাটাজোর ও তামাট বাজারে ১০/১২ টি ও হবিরবাড়ি বিটের আওতায় মনোহরপুর গ্রামে গজারী বনের ভেতর একটিসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা প্রায় শতাধিক অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের ব্যাপারে বনমন্ত্রী নির্দেশ দিলেও রহস্যজনক কারণে প্রায় এক মাসেও দৃশ্যমান কোন প্রদক্ষেপ চোখে পড়ছেনা। এতে স্থানীয়দের মাঝে বনবিভাগের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও বনবিভাগ বলছে ম্যাজিস্ট্রেট না পাওয়ার কারণে তারা অভিযান চালাতে পারছেন না। গত ১ জানুয়ারী শনিবার সকালে উপজেলার হবিরবাড়িতে ভালুকা জোনের সহকারী বন সংরক্ষকের কার্যালয়ের নতুন ভবনের শুভ উদ্বোধনকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন (এমপি) স্থানীয় এমপি ও বনবিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকতার্দের উপস্থিতিতে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, বনআইনে বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের মধ্যে করাতকল স্থাপন নিষিদ্ধ হলেও বনবিভাগকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে কাদিগড় বনাঞ্চল থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কাচিনা বাজার ও আড়াই কিলোমিটার দূরে বাটাজোর বাজার এলাকায় ২০টি লাইসেন্সবিহীন করাতকল গড়ে উঠেছে। এসব করাতকলে উদ্যানের বিভিন্ন প্রজাতিয় গাছের কাঠ চেরাই করা হয়। কাদিগড় বনবিট অফিস থেকে মাত্র এক-দেড় কিলোমিটার দূরে বাটাজোর বাজারে নয়ন মিয়ার দুটি, আতিক মন্ডল, পলাশ তালুকদার, সেলিম তালুকদার, ইমরুল তালুকাদার, জাহাঙ্গীর মেম্বার ও পাপনের মালিকানাধীন অবৈধ করাতকল ছাড়াও আরো সাত-আটটি করাতকলে প্রকাশ্যেই চেরাই করা হচ্ছে বনের গাছ। শুধু কাচিনা আর বাটাজোরই নয়, জাতীয় উদ্যানের মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে তামাট বাজারে শাহীন মেম্বারের মালিকানাধীন করাতকলসহ তিনটি করাতকলে রাতদিন বনের গাছ চেরাই করা হয়। ক্রমাগত গাছ কাটার ফলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে জাতীয় উদ্যানের সৌন্দর্য ও ধ্বংস হচ্ছে জাতীয় সম্পদ।
কিছুদিন আগেও উদ্যান এলাকায় মেছোবাঘ, লজ্জাবতী বানরসহ কয়েক প্রজাতির প্রাণী উন্মুক্ত করা হলেও বন উজাড় হওয়ায় এদের অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের উদাসীনতার সুযোগ নিচ্ছে অবৈধ করাতকল মলিক ও কাঠ পাচারকারী সংঘবদ্ধ চক্র। তাছাড়া উপজেলার মল্লিকবাড়ি, মাস্টারবাড়ি, কাশরগড়, মল্লিকবাড়ি মোড় ও মল্লিকবাড়ি বাজার, উথুরা রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন, উথুরা বাজার, চামিয়াদী বাজার, কৈয়াদী বাজার, ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ড এলাকা, আঙ্গারগাড়া ও ডাকাতিয়া চৌরাস্তা বাজার, পনাশাইল বাজারসহ ভালুকা রেঞ্জের হবিরবাড়ি বিটের আওতায় মনোহরপুর গ্রামে তিনদিক গাজারী বাগান থাকার পরও বনকমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কাশেমের ছেলে সোহাগ মিয়া স্থানীয় বিট অফিসের অদূরে অবৈধ করাতকল বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ১১ গড় নামে পরিচিত বিশাল বন এলাকাসহ আশপাশের বিশাল বিশাল গজারী গাছ রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে তার নিজস্ব করাতকলে চেড়াই করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে আসছেন, এমন একটি সচিত্র সংবাদ সম্প্রতি দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ভালুকা আঞ্চািলক শাখার সদস্য সচিব ও ভালুকা প্রেসক্লাব সভাপতি কামরুল হাসান পাঠান কামাল বলেন, বন এলাকায় অবৈধ শতাধিক করাতকল বনাঞ্চল উজাড় করে অক্সিজেনের ভান্ডার ধ্বংশ করছে। এসব অবৈধ করাতকলগুলো স্থানীয় বনবিভাগকে অনৈতিক সুবিধা দিয়েই পরিচালিত হচ্ছে বলে আমি মনে করি।
ভালুকা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকতার্ মো: মহিউদ্দিন ও কাদিগড় বিট কর্মকতার্ ফিরোজ আল আমিন জানান, বনমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশের পর অবৈধ করাতকল উচ্ছেদের ব্যাপারে ম্যাজিস্টেট চেয়ে ইতোমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট পেলেই আমরা উচ্ছেদ অভিযানে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com