প্রকাশিত হয়েছেঃ জানুয়ারি ২৫, ২০২২ সময়ঃ ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ
ভালুকা প্রতিনিধি ২৫ জানুয়ারীঃ
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার ২৪ জানুয়ারি দুপুরে কাঁশর কমিউনিটি ক্লিনিকে খোঁজ নিয়ে দেখাযায়, স্থানীয় ও বহিরাগত লোকজন ভোক্তভূগী হিসাবে ক্লিনিকের পাশে ছুটাছুটি করছেন এই বলে যে, দুপুর ১২ টায় ক্লিনিকের পরিবার কল্যাণ সহকারী রাফেজা ক্লিনিকে তালা ঝুলিয়ে নাকি বাসায় চলে গেছেন। এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বললে তিনি প্রথমে অসুস্থ্যতার কথা বলেন।
ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উপজেলায় ৪৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে এবং ক্লিনিক থেকে নিয়মিত ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে চলছে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি। এলাকা ঘুরে স্থানীয় জনসাধারণের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, নামে মাত্র কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে কিন্তু সপ্তাহে দু-একদিন ছাড়া ক্লিনিকগুলো বন্ধ থাকে।
তারা আরও জানান, ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রতি মাসে যে পরিমাণ ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে তার ১০ ভাগ ওষুধও গরিব-দুঃখী মানুষের ভাগ্যে জোটে না বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা। সপ্তাহে দু-একদিন ক্লিনিক খুললেও দু-চারজনকে নামে মাত্র কিছু ওষুধ দিয়ে বিদায় করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্য রোগীদের ওষুধ নেই বলে বিদায় করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বে রয়েছে একজন স্বাস্থ্য সহকারী ও একজন পরিবার কল্যাণ সহকারী।এদের অফিস চলাকলীন খুঁজেও পাচ্ছেন না সেবাপ্রত্যাশীরা।
এছাড়াও বর্তমানে সিএইচসিপি নাহিদা আক্তার কমিউনিটি ক্লিনিকে শুণ্য পদে আছেন বলে রোগীরা সেবা পাচ্ছেন না ও স্বাস্থ্য সহকারী এস এম রফিকুল ইসলাম অসুস্থ্যতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন।
স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করতে গেলে স্বাস্থ্য সহকারী বলে থাকেন সরকারি কাজে বাধা দেয়ার পরিণাম হবে ভয়াবহ, তাই স্থানীয় লোকজন সব দেখে-শুনেও মুখ বন্ধ করে থাকেন।কোনো তদারকি না থাকার কারণে স্বাস্থ্য সহকারী নিজের ইচ্ছানুযায়ী ক্লিনিক খুলেন এবং বন্ধ করেন।
স্থানীয় রোজিনা তার ৪ মাস বয়সী শিশু কণ্যা হাবীবার ও মরিয়ম আক্তার তার ৫ মাস বয়সী শিশু কণ্যা রিয়া মনির টিকা কার্ডের জন্য গেলে স্বাস্থ্য সহকারী ২শত টাকা করে দাবী করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তাছাড়াও স্থানীয় এমাতুল ইসলাম ও রুহুল আমিন এই কাঁশর কমিউনিটি ক্লিনিকের নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী আবু নঈম মোঃ মামুনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি প্রথমে এরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. হাসানুল হোসেনের সাথে মুঠু ফোনে কথা বলে মামুন ভাউচার ছাড়া রোগীদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ ও টিকা কার্ডের জন্য অতিরিক্ত ২শত ও ৩শত করে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেন যাহা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত কর্মকান্ড।
বিষয়টি নিয়ে সেনেটারী ইন্সপেক্টর মিজানের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, স্বাস্থ্য সহকারী আবু নঈম মোঃ মামুন নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর ব্যাক্তি মনে করেন তিনি কখনো কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে বেড়ান। এমনকি বহিরাগত শিশুদের টিকা কার্ডের জন্য ১ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. হাসানুল হোসেনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, ক্লিনিকগুলোতে ২৭ প্রকারের ঔষধ সরবরাহ হয়ে থাকে। যদি কোন কর্মকর্তা ঐষধে দূর্নীতি করে এবং রোগীদের কাছ থেকে ভাউচার ছাড়া টাকা নেই ও টিকা কার্ডের জন্য টাকা গ্রহণ করে এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আমি নিজে তদারকি করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম জানান, টিকা কার্ডের জন্য কোন কর্মকর্তা অতিরিক্ত টাকা নিতে পারে না, তাছাড়াও রোগীদের ঔষধের জন্য ভাওচার ছাড়া টাকা গ্রহণও সম্পূর্ণ অবৈধ বলে তিনি মন্তব্য করেন।