প্রকাশিত হয়েছেঃ ডিসেম্বর ২৬, ২০২১ সময়ঃ ৯:২১ অপরাহ্ণ
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক,২৬ ডিসেম্বরঃ
গাজীপুর মহানগরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাইলকুর এলাকায় ‘ঠাকুরবাড়ি’ খ্যাত সংখ্যালঘুদের জমি দখলকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২৬ ডিসেম্বর রোববার মহানগর কৃষকলীগের সিনিয়র সহসভাপতি মমিন মিয়া ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবী করে দলবল নিয়ে জমি দখল করেন। এসময় মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের লোকজন বাধা দিলে হাতাহাতিসহ উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কৃষকলীগ নেতা মমিন মিয়া জানান, দীর্ঘ দিন যাবত হিন্দুদের আলোচিত জমি এলাকার প্রভাবশালী ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মনিরুজ্জামান ও তার স্বজনরা অবৈধভাবে ভোগ দখল করে আসছেন। তিনি (মমিন মিয়া) হিন্দুদের কাছ থেকে প্রায় দুই বছর আগে ক্রয়সূত্রে ২২ শতাংশ জমির মালিকানা লাভ করেন। এর পর থেকে তিনি জমির দখলে যেতে চাইলে সদ্য বরখাস্ত গাসিক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের অনুসারী ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মনিরুজ্জামান ও তার স্বজনরা বাধা দিয়ে আসছেন। গতকাল রোববার তিনি বালি ফেলে জমি ভরাট ও টিনের বেঁড়া দিতে গেলে মনিরুজ্জামানের স্বজনরা বাধা দেন।
এব্যাপারে মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ভাতিজা রুবেল মিয়া জানান, পৈত্রিক সূত্রে তারা দীর্ঘ প্রায় ৫০-৬০ বছর যাবত জমিটি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখলে আছেন। সম্প্রতি কৃষকলীগ নেতা মমিন মিয়া জালজালিয়াত চক্রের সহযোগিতায় জমির মালিকানা দাবী করে আসছেন এবং রোববার শতাধিক ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও দলবল নিয়ে বালি ফেলে জমি জবর দখল করেন। এসময় সেখানে টিনের বেঁড়া নির্মাণকালে তারা বাধা দিলে ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা তাদেরকে মারধর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে সন্ত্রাসীদের কবল থেকে উদ্ধার ও জবর দখল বন্ধ করে। ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের জন্য দুপুরে মমিন মিয়ার বাড়ির আঙ্গিনায় ভুরিভোজের আয়োজন করা হয় বলেও রুবেল মিয়া অভিযোগ করেন।
এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ দিন আগে হিন্দুরা এসব জমি বিক্রি না করেই অন্যত্র চলে যান। পরে এসব জমি স্থানীয় প্রভাবশালীরা অন্যায়ভাবে ভোগদখলে নেন। মমিন মিয়া যে বাড়িতে বাস করেন একসময় সেটিও হিন্দু সম্প্রদায়ের ঠাকুরবাড়ি হিসেবে পরিচিত ছিল। ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন যে জমিটি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে সেটিও ঠাকুর বাড়িরই সম্পত্তি।
এব্যাপারে জিএমপি গাছা থানার ওসি মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তর্কিত জমিটির মালিক ছিলেন হিন্দুরা। সম্প্রতি একপক্ষ ১৯৬৩ সালের একটি দলিলমূলে এবং অপরপক্ষ ২০১৯ সালের দলিলমূলে জমির মালিকানা দাবী করছেন। দুই পক্ষই পরস্পরের দলিলকে জাল বলে অভিযোগ করছেন। এঅবস্থায় জমিটির মালিকানা রহস্যাভৃত।
সাম্প্রতিককালে যেসব সাফ কবলা দলিলমূলে জমির মালিকানা দাবি করা হচ্ছে সেসব দলিলের দাতারা প্রকৃত হিন্দু বা জমির মালিক কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত মন্তব্য করে থানার ওসি আরো বলেন, বহু বছর আগেই জমির প্রকৃত মালিক হিন্দুরা ভারত বা অন্যত্র চলে গেছেন। এ অবস্থায় প্রকৃত মালিকানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত জমিটির রিসিভার নিয়োগ করা উচিত।
#