প্রকাশিত হয়েছেঃ জুন ৬, ২০২১ সময়ঃ ৭:৪৮ অপরাহ্ণ
ভালুকা প্রতিনিধিঃ-
ময়মনসিংহের ভালুকায় প্রথমে মাটি ফেলে, খড়ের পুঞ্জি দিয়ে, সবশেষ জাল ও তারের বেড়া দিয়ে সাংবাদিক আবুল বাশার শেখের বাড়ির রাস্তা বন্ধ করায় ৬টি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। মোফাজ্জল হোসেন খান গং, রয়েল খান গং ও শামীম মিয়া নামে তিন প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে রাস্তাটি বন্ধের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাস্তাটি বন্ধ করায় পরিবারগুলো গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে।
৬ জুন রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, চলাচলের জন্য একটি মাটির রাস্তার স্থানে স্থানে উচু করে মাটি ফেলে তার মাঝখানে খড়ের পুঞ্জি ও জাল ও তারের বেড়া দিয়ে রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রাস্তার ব্যাপারে স্থায়ী সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর গত ৩ মার্চ একটি লিখিত আবেদন করেছেন দৈনিক আমার সংবাদ ভালুকা প্রতিনিধি ও ভালুকা প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক আবুল বাশার শেখ। আবেদনে সাংবাদিক জানান, আমার পরিবারের সদস্যরা আমাদের এই পৈত্রিক ভিটা থেকে শত বছরের উপরে থেকে চলাচল করে আসছেে। আমাদের বাড়ী হতে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তাটি আমার দাদার আমল থেকে ব্যবহার করে আসছি। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন আমাদের বাড়ীসহ আশে পাশের শতাধিক লোকের চলাচল। আমার প্রতিবেশী মৃত মজলিস খানের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন খান গং, মৃত নূরুল ইসলাম খানের ২য় ছেলে রয়েল খান গং ও মৃত হামেদ আলী শেখের ছেলে শামীম মিয়া অবৈধভাবে মাটি ফেলে তার মাঝখানে খড়ের পুঞ্জি ও জাল ও তারের বেড়া দিয়ে দীর্ঘদিনের এই জনচলাচলের রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়ায় আমাদের বাড়ীর লোকজন বাড়ী থেকে বের হতে পারতেছেনা। একমাত্র রাস্তাটি ২০১৬ সালে আমার প্রতিবেশী মৃত নূরুল ইসলাম খানের ২য় ছেলে রয়েল খান গং ও মৃত মজলিস খানের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন খান গং গোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে কিছুদিন বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখে। রাস্তা বন্ধের বিষয়টি এলাকার সবাইকে জানানো হয়। তাই ওই সময় বিষয়টি নিয়ে আমার বড় ভাই মোঃ রফিকুল ইসলাম শেখ ৪নং ধীতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলমের কাছে গ্রাম আদালতে বিচার প্রার্থী হলে চেয়ারম্যান একাধিকবার মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে উনার লিখিত বক্তব্য দিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিকের পরিবার প্রায় ১০০ বছর ধরে ওই রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করত। হঠাৎ গত ২৬ ফেব্রুয়ারী প্রতিবেশী মোফাজ্জল হোসেন খান গং, রয়েল খান গং ও শামীম মিয়া রাস্তাটির স্থানে স্থানে উচু করে মাটি ফেলে রাস্তাটি বন্ধ করে। এমনকি কিছুদিন আগে খড়ের পুঞ্জি ও ৫ জুন শনিবর জাল ও তারের বেড়া দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়। পরিবারগুলো বাধা দিতে গেলে তারা রাস্তার মধ্যে আরও বেশি মাটি ফেলে বন্ধ করে দেন। বিকল্প কোনো রাস্তা না থাকায় ৬টি পরিবারের সদস্যরা বেকায়দায় পড়েছেন।
অবরুদ্ধ একটি পরিবারের সদস্য কামাল উদ্দিন শেখ বলেন, তারা আমাদের জমিতে জবর দখল করে ঘর নির্মাণ করতে চাইলে আমরা তাতে বাধা দিই কিন্তু তারা তা মানেনি তাই আমরা আইনের আশ্রয় নিলে তারা হিংসার বশবতি হয়ে আমাদের বাড়ি থেকে বের হওয়ার প্রায় একশ বছরের পুরোনো রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। এলাকায় তারা প্রভাবশালী হওয়ায় মাঝে মধ্যেই সামান্য কারণেই তারা রাস্তাটি বন্ধ করে দেয়। অথচ এই রাস্তাটি আমার বাপ দাদার সম্পত্তিতে।
এ বিষয়ে রবিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা খাতুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাস্তাটি খোলে দেয়ার নির্দেশ প্রদান করার পরও প্রভাবশালীরা রাস্তাটি বন্ধ করে রেখেছে।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষ মোফাজ্জল হোসেন জানান, রফিকুল ইসলাম গং আমাদের জমির উপর দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে চলাচল করে আসছিলো, কিন্তু তারা আমাদের বিরুদ্ধে পর পর তিন মিথ্যা মামলা দিয়েে হয়রানি করছে। তারপরও দুপক্ষ বসে সমস্যার সমাাধাণ করার চেষ্টা করব।
ইউএনও সালমা খাতুন জানান, পরিদর্শন করে রাস্তাটি খুলে দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।