বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ ডিসেম্বর ১০, ২০২১ সময়ঃ ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ

মোঃ জাকির হোসেন, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।।
আজ ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয়েছিল ময়মনসিংহ। মিত্রবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধারা শম্ভুগঞ্জ থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে দলে দলে সার্কিট হাউজ মাঠে জমায়েত হতে থাকে। অবরুদ্ধ শহরবাসী এ খবর পেয়ে আনন্দ উল্লাসে রাস্তায় নেমে আসে। একদিকে বিজয় উল্লাস অন্যদিকে স্বজন হারানোর বেদনা সব মিলিয়ে দিনটি অত্যন্ত বেদনা বিধুর। তবে সর্বপোরি দিনটি ছিল অত্যন্ত খুশির, আনন্দের ও মুক্তির দিন।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চ ভাষণের পর থেকে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত ময়মনসিংহকে দখলমুক্ত রেখে ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধারা। ২৩ এপ্রিল ময়মনসিংহের পতন ঘটলে মুক্তিযোদ্ধারা শহর ছেড়ে সীমান্তের ওপারে চলে যায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবনে স্থাপন করা হয় পাক হানাদার বাহিনীর বিগ্রেড হেড কোয়ার্টার। হানাদারদের সহযোগী হিসাবে গড়ে তোলা হয় আলবদর আল সামস, রাজাকার বাহিনী। জেলা পরিষদ ডাক বাংলোটির “শান্তি ভবন” নাম দিয়ে টর্চার সেল ও কিলিং সেন্টার গড়ে তোলে। ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে গড়ে তোলে আরও ২টি আস্তানা।
এছাড়াও অবাঙ্গালী বিহারিরা শহরের ছোট বাজারে গড়ে তোলে “কিলিং জোন”। ৭১ এ পাক সেনা আর রাজাকার, আল বদররা এসব আস্তানায় বাঙ্গালী নিধনে মেতে উঠে ছিল। প্রতিদিনের সেই নৃশংসতার নিদর্শন দেখা যেত ব্রহ্মপুত্রের চরে।
মুক্তাগাছা, গৌরীপুর ও নান্দাইলের এইনৃশংসতার মাত্রা ছিল ভয়াবহ। প্রায় ৭ মাস পাক সেনাদের দখলে থাকার পর নভেম্বরের শেষের দিকে এক একদিন থেকে মুক্ত হতে থাকে ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলা। ডিসেম্বরের ১ম সপ্তাহে নেত্রকোনা থেকে একটি গ্রুপ অগ্রসর হয় ময়মনসিংহের দিকে।
একই সময় হালুয়াঘাট, ফুলপুর হয়ে মিত্র বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেক একটি দল অগ্রসর হয় শহরে অভিমুখে। ৯ই ডিসেম্বর রাতে ২টি দল অবস্থান নেয় ব্রহ্মপুত্রের ওপারে শম্ভুগঞ্জে। মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর অবস্থান টের পেয়ে শহরে কারফিউ জারী করে হানাদাররা। অপরদিকে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকার দিকে পালিয়ে যায় পাক সেনারা। ১০ই ডিসেম্বর সকালে মুক্তবাহিনী ও মিত্রবাহিনী ময়মনসিংহ শহরে প্রবেশ করে। মুক্তিবাহীনীর নেতৃত্বে ছিলেন ঢালু যুব শিবির প্রধান বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান এবং মিত্রবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন বিগ্রেডিয়ার সামস শিংহ বাবাজি। ১০ই ডিসেম্বর সার্কিট হাউজ মাঠে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মোঃ মতিউর রহমান। মিত্রবাহিনীর কমান্ডার বাবাজির নেতৃত্বে শহরে প্রবেশ করে মুক্তিযোদ্ধারা ময়মনসিংহ থেকে হানাদার মুক্ত করেন। এর পর থেকে প্রতি বছর দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও জেলা প্রশাসন ১০-১৬ ডিসেম্বর মুক্ত মঞ্চ ছোট বাজার মুক্তিযুদ্ধা সরণি সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com