বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২১ সময়ঃ ১০:২৪ অপরাহ্ণ

গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক, ২৪ সেপ্টেম্বরঃ
যৌতুকের দাবিতে একাধিক নারী নির্যাতনকারী আলোচিত মিজানুর রহমান ওরফে মিজানকে অবশেষে টঙ্গী থেকে গ্রেফতার করেছে পাগলা থানা পুলিশ। যৌতুকের জন্য নির্যাতন ও জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানায় তার নামে মামলা হয়।
গ্রেফতারকৃত মিজানুর রহমান (৩৫) ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার শাকরা পাড়ার নিজাম উদ্দিনের ছেলে। শুক্রবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী পূর্ব আরিচপুর জামাই বাজারের নিজস্ব বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাগলা থানা পুলিশ। যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন ও জোরপূর্বক টঙ্গীর মেরী স্টোপস ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মিজানের বর্তমান স্ত্রী খালেদা আক্তার পাগলা থানায় মামলাটি (নং-১৭) রুজু করেন। মামলায় ওই গৃহবধুর শ্বাশুরী মনোয়ারা ও ননদ (স্বামীর বোন) মাহফুজা আক্তারকেও আসামী করা হয়েছে।
নির্যাতিতা গৃহবধু খালেদা আক্তারের বাবা হাবিবুল ইসলাম জানান, যৌতুকের দাবীতে স্বামী, শ্বাশুরী ও ননদ খালেদাকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। একইভাবে আগের স্ত্রীকেও যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের অভিযোগে মিজানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। যৌতুকের দাবী মিটাতে না পারায় গত বছর খালেদাকে টঙ্গী বাটা গেট সংলগ্ন মেরী স্টোপস ক্লিনিকে নিয়ে জোরপূর্বক তিন মাসের গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেয়। গর্ভপাতের এ ঘটনায় খালেদা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে উপযুক্ত চিকিৎিসা থেকেও তাকে বঞ্চিত করা হয়। কিন্তু এর পরও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বাবিবুল বহু কষ্টে একাধিকবার যৌতুকের দাবী মিটিয়েছেন। মেয়ে জামাতার পাগলা থানার শাকড়া পাড়ার বাড়িতে ঘর নির্মাণ করে আসবাবপত্র দিয়ে সংসার সাজিয়ে দিয়েছেন। ‘কিন্তু এর পরও তাদের চাহিদার যেন শেষ নেই’- মন্তব্য করেন গৃহবধুর বাবা হাবিবুল। তিনি আরো বলেন, ‘সন্তান পেটে আসলে শ্বশুর বাড়ির সবাই খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু আমার মেয়ে যখনই সন্তান সম্ভবা হয় তখনই তার ওপর স্বামী, শ্বাশুরী ও ননদের নির্যাতন নেমে আসে’।
হাবিবুল অভিযোগ করে আরো জানান, প্রথমবার তিন মাসের সন্তান নষ্ট করার পর দ্বিতীয় বার সন্তান সম্ভবা হলে আবারো তার মেয়ে খালেদাকে গর্ভপাত ঘটানোর জন্য চাপ দেয়া হয়। গর্ভপাতে খালেদা রাজি না হওয়ায় গত ঈদুল আযহার দুদিন আগে মারধর করে বাড়ি থেকে জোরপূর্বক তাড়িয়ে দেয় এবং ঘরে তালা দিয়ে সকলে টঙ্গীর বাড়িতে চলে যায়। এর পর থেকে তারা খালেদার ভরণপোষণসহ কোন ধরণের খেঁাজ খবর নিচ্ছে না। তার মেয়ে ভিকটিম খালেদা বর্তমানে পঁাচ মাসের অন্ত:সত্ত্বা। এব্যাপারে সামাজিকভাবে একাধিকবার দরবার হলেও গ্রামের মাতাব্বরদের সিদ্ধান্তকেও কোনো তোয়াক্কা করছে না যৌতুকলোভী পরিবারটি। বরং মেয়ের শ্বাশুরী সালিশী বৈঠকে মাতাম্বরদের সাথেও অশোভন আচরণ করেছেন। অবশেষে নিরুপায় হয়ে তারা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হন বলে জানান হাবিবুল।
ঘটনাটি নাটককেও হার মানিয়েছে মন্তব্য করে পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক তদন্তে গৃহবধুর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। গৃহবধুর অভিযুক্ত স্বামী মিজানকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমের শ্বাশুরী ও ননদকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। জোরপূর্বক গর্ভপাত ঘটানোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ক্লিনিক কতর্ৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
#

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com