বিজ্ঞাপন দিন

প্রকাশিত হয়েছেঃ নভেম্বর ২৭, ২০২৩ সময়ঃ ৬:০৬ অপরাহ্ণ

আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ)।।
ময়মনসিংহের ভালুকায় শতভাগ পাশের নিশ্চয়তায় ভর্তি হওয়া এইচএসসির শিক্ষার্থীরা তাদের ফলাফল বিপর্যয়ের কারণে দু’টি কলেজের অধ্যক্ষকে কয়েক ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। গতকাল সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মর্নিংসান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
বিক্ষব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, শতভাগ পাশের নিশ্চয়তা দিয়ে ভালুকা মর্নিংসান মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেও মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ফরমপূরণের মাধ্যমে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ করে দেন। তারা নিয়মানুযায়ী প্রবেশপত্র সংগ্রহের মাধ্যমে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। রোববার ফলাফল প্রকাশের দিন তারা প্রতিষ্ঠানে গেলে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে নতুন রোল নম্বর সম্বলিত আরেকটি প্রবেশপত্র ধরিয়ে দেন।
মর্নিংসান স্কুল অ্যান্ড কলেজের ফেল করা শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষের শতভাগ পাশের নিশ্চয়তার আশ^াস পেয়ে অন্য কলেজ থেকে এসে তারা এখানে ফরমপূরণ করেন। যথারিতি তারা প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে পরীক্ষা দেন। কিন্তু ফলাফল প্রকাশের আগেরদিন তাদেরকে নতুন রোল নম্বর সম্বলিত প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়। তারা এই কলেজ থেকে ৮১৬ জন পরীক্ষা দেন। কিন্তু ৪৪৩ জন ফেল করেছেন। ওই কলেজের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী গাজীপুরের মাওনা পিয়ার আলী কলেজ থেকে টেষ্ট পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থী মুন্নি জানান, শতভাগ পাশের নিশ্চয়তায় তিনি ২৮ হাজার টাকায় মর্নিংসান কলেজে ফরম পূরণ করে পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু ভালো পরীক্ষা দিয়েও ফেল করেছেন। রুনা নামে এক পরীক্ষার্থী ৫০ হাজার টাকায় এবং মিম ২৫ হাজার টাকায় ফরম পূরণ করে ভালো পরীক্ষা দিয়েও তাদের একই অবস্থা।
ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মানবিক শাখায় অংশগ্রহণকারী মোছা. কাকন আক্তারের রোল নম্বর ৪০৮৭২৪ ও ইসরাত জাহান জেরিনের রোল নম্বর ৪০৮৭২৩ সম্বলিত প্রবেশপত্র নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। কিন্তু পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের দিন তাদের নতুন রোল নম্বর সম্বলিত প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়। যার রোল নম্বর-৭০৮৭২৪ (কাকন) ও ৭০৮৭২৩  (জেরিন)। কাকনের পূর্বের রোল নম্বরে ফলাফল জানতে সার্চ দিলে নিজের নামের পরিবর্তে সুসং দূর্গাপুর সরকারী মহাবিদ্যালয়ের মাজাহরুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থীর নাম আসে। জেরিনের ফলাফল জানতে সার্চ দিলে একই কলেজের তোফায়েল হোসেনের নাম আসে। তবে নতুনরোল নম্বরে সার্চ দিলে তাদের ফলাফল ফেল আসে। তেমনি ওই প্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী ৫৬ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে ৫১ জনেরই একই অবস্থা এবং ওই প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করেছে ১৬ জন।
মর্নিংসান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শতভাগ পাশের নিশ্চয়তার কথাটি অস্বীকার করে বলেন, বোর্ড নিয়মের বাইরে কোন টাকা নেননি।
ভালুকা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো হাফিজ উদ্দিন সুমন জানান, এসব বিষয়ে তার কিছুই করার নেই, সব বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এরশাদুল আহম্মেদ জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যা নিয়ে আসলে তিনি শিক্ষাবোর্ডে কথা বলেন।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ জানান, ময়মনসিংহ শিক্ষাবোর্ডের উদাসিনতা ও কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণে রোল নম্বরে গড়মিল হওয়ায় এমনটি হয়েছে বলে তিনি ধারনা করছেন।
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের উপ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আবু সায়েম মো: হাসান জানান, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এ বোর্ডে শতকরা ৫ জন পরীক্ষার্থীর এ সমস্যা হয়েছে। এক মাস পূর্বেই স্বস্ব কেন্দ্রে সংশোধিত নতুন রোল নম্বর সম্বলিত প্রবেশপত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com