প্রকাশিত হয়েছেঃ জুলাই ৩, ২০২১ সময়ঃ ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ

মোঃ সিরাজুল মনির চট্টগ্রাম ব‍্যুরো:-

বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে মাত্র ২০ দিন হয়েছে। এরই মঝে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে নগরের ৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে গত বর্ষায় শহরের ১৭০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আর্থিক সংকটসহ নানা কারণে গত বছর ক্ষতি হওয়া সড়কগুলোর এখনো সংস্কার কাজ শেষ করতে পারেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ অবস্থায় চলতি বর্ষায় নতুন করে ক্ষতি হওয়া সড়ক সংস্কার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে সংস্থাটি।

চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বর্ষায় এ পর্যন্ত ক্ষতি হওয়া সড়ক সংস্কারে প্রয়োজন ৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সাধারণত থোক বরাদ্দ হিসেবে পাওয়া অর্থ থেকে ঠিকাদারের মাধ্যমে ক্ষতি হওয়া সড়ক সংস্কার বা মেরামত করা হয়। কিন্তু বিগত সময়ে সংস্কার কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারের ২৯৯ কোটি টাকা বিল বকেয়া আছে। এতে নতুন করে ক্ষতি হওয়া সড়ক সংস্কারে আগ্রহী হচ্ছেন না বেশিরভাগ ঠিকাদার।এদিকে আর্থিক সংকটের মধ্যেও জরুরি ভিত্তিতে প্যাচওয়ার্ক করে সড়ক সংস্কার করতে চায় চসিক। এজন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সহায়তাও চেয়েছেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামকে উপানুষ্ঠানিক পত্র দিয়ে প্রাথমিকভাবে ৫০ কোটি বরাদ্দ চেয়েছেন তিনি।বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিটি মেয়র। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে অনেকগুলো সড়কের ক্ষতি হয়েছে। পিসি রোডে আমরা কাজ করেছিলাম। সেখানে আবার বড় গর্ত হয়ে গেছে। স্ট্রান্ড রোডে কাজ করেছিলাম। সেখানেও ওয়াসার কাটাকাটি এবং বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। কাজ করে কোনোভাবে আগানো যাচ্ছে না। এদিকে ঠিক করি অন্যদিকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।পত্রে যা লিখলেন : স্থানীয় সরকার মন্ত্রীকে দেয়া পত্রে মেয়র বলেন, চলতি বছর বর্ষা মৌসুমে ক্রমাগত বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির কারণে ৪১টি ওয়ার্ডে আনুমানিক ৩৬ দশমিক ২৭ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কগুলি মেরামতের জন্য আনুমানিক ৯১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। ঠিকাদারগণকে অর্থপ্রাপ্তি সাপেক্ষে পরিশোধের শর্তে সাধারণত এ ধরণের মেরামত কাজ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ২৯৯ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের আওতায় উন্নয়ন কাজে নিযুক্ত ঠিকাদারগণের বকেয়া রয়েছে। ফলে প্যাচওয়ার্কসহ মেরামত কাজের জন্য ঠিকাদারগণকে নগদ বিল পরিশোধ করা না হলে এ কার্যক্রমকে বেগবান করা সম্ভব হচ্ছে না।
পত্রে মেয়র বলেন, চলমান বর্ষা মৌসুমে চট্টগ্রাম নগরীর রাস্তাঘাট ব্যাপকভবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা প্যাচওয়ার্কের মাধ্যমে অতিদ্রুত মেরামত করে সচল রাখা অপরিহার্য। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবে এবং যানবাহন চলাচল সচল রাখার জন্য গুরুত্ব বিবেচনায় সড়কগুলো আশু মেরামত খুবই জরুরি। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসমূহের মধ্যে গোসাইলডাঙ্গা খালপাড় রোড, আবদুল লতিফ রোড, মেহেদিবাগ রোড, পল্টন রোড, জুবিলি রোড ও বাটালী রোড অন্যতম। সড়কগুলোসহ ও অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত ও প্যাচওয়ার্কের জন্য চসিকের অনুকূলে ৫০ কোটি টাকা প্রাথমিকভাবে বরাদ্দ প্রদানে মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয় পত্রে।
চলছে প্যাচওয়ার্ক : সিটি কর্পোরেশন নিজস্ব অ্যাসপল্ট প্ল্যান্ট থেকে তৈরি মিঙার (ইট, বালি, সিমেন্টে, বিটুমিনের মিশ্রণ) দিয়ে ছোট ছোট গর্ত ভরাট করে থাকে। চসিকের ভাষায় এটি প্যাঁচওয়ার্ক। এ ধরনের প্যাঁচওয়ার্কের কাজ চলমান আছে বলে জানিয়েছেন চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) সুদীপ বসাক। তিনি বলেন, গতকাল  নন্দনকান, গোসাইলডাঙ্গা, চকবাজার, মেরিনার্স রোড, হাটহাজারী রোড, ইপিজেড মোড়, পিসি রোড ও হালিশহর রোডে ৪৯ টন মিঙার দিয়ে প্যাচওয়ার্ক করা হয়েছে। আজ (গতকাল) বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখা হয়।এদিকে সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, অঙিজেন মোড়, হাটহাজারী সড়কের আতুরার ডিপো থেকে হামজারবাগ, সিটি কলেজের সামনে থেকে স্কুল, সদরঘাট থেকে বাংলা বাজার, ইপিজেড, স্ট্রান্ড রোডসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। যা পথচারি এবং যাত্রীদের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একইসঙ্গে ভাঙা সড়কগুলোতে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। এতে বাড়ছে যানজটও।

প্রকাশক ও সম্পাদক

আসাদুজ্জামান (ফজলু)

হাউজ নং: ২০, ফ্ল্যাট নং: বি২, রোড নং: ০৭

সেকশন: ১২, উত্তরা, ঢাকা – ১২৩০

মোবাইল: ০১৭১৮-১৯২৬৮৫, ০১৭৬১-৫৮২৩৩৮

ইমেইল: contact@digontabarta.com