প্রকাশিত হয়েছেঃ ডিসেম্বর ১৩, ২০২১ সময়ঃ ৯:০২ অপরাহ্ণ
গাজীপুর থেকে নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
টঙ্গীতে হিফজ সমাপ্তকারী শিক্ষার্থীদের পাগড়ী ও অ্যাওয়ার্ড-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, মোবাইল আসক্তি মাদকের চেয়েও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সকল ফেতনা মোকাবেলা করে সন্তানদের সুপথে রাখা বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্তানদের বিপদগামী থেকে রক্ষার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষার কোন বিকল্প হতে পারে না। রাসুল (সা.) এর আদর্শের সাথে সন্তানদের পরিচয় করাতে পারলে তারা শ্রেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
গতকাল সোমবার টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের আয়োজনে মাদ্রাসা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হিফজ সমাপ্তকারী শিক্ষার্থীদের পাগড়ী ও অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তা’মীরুল মিল্লাত ট্রাস্ট্রের সেক্রেটারি শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ যাইনুল আবেদীন ও প্রধান বক্তা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহ বক্তব্য দেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এ এন এম সিরাজুল ইসলাম, জেদ্দা, সৌদি আরব। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন, টঙ্গী তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, মাওলানা শফিক উল্লাহ আল মাদানী, ড. মোয়াজ্জেম হোসেন আল-আজহারী, মো. ইসহাক আলী প্রমুখ। এছাড়া অভিভাবকদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মো. রমজান আলী। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাহফজুর রহমান এবং ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন ইসতিয়াক আহমদ নাবিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা যাইনুল আবেদীন বলেন, আমরা যে জমিনে বসবাস করছি একসময় এই জমিন এমন ছিল না। যুগ যুগ ধরে বহু ওলামায়ে কেরাম মেহনত করে এই জমিনকে আবাদ করেছেন। তঁারা অনেক কষ্ট স্বীকার করেছেন, তবুও কারোর কাছে হাত পাতেননি, কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নথ করেননি। তিনি বলেন, তা’মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছে দ্বীনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তা’লীমুল ইলম হিসেবে আমরা যথার্থ ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, করোনা মহামারীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে অনেক শিক্ষার্থী ইন্টারনেটে প্রবেশ করে বিপদগামী হয়েছে। মোবাইল আসক্তি মাদকাসক্তির চেয়েও বেশি ক্ষতি করছে। এর কুফল কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা হয়তো আমরা এখন টের পাচ্ছি না। এব্যাপারে অভিভাবকদেরকে এক্ষনই সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দাবী ছিল, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে এখন মাদ্রাসা থেকেই ইসলাম যেন বিদায় হয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা শায়েখ আহমাদুল্লাহ বলেন, ইসলামের মৌলিক বিষয়ে কোন ইখতিলাফ (মতপার্থক্য) নেই। ছোট খাট বিষয়ে যে ইখতিলাফ আছে তা সাহাবীদের (রা.) মধ্যেও ছিল। এসব ছোট খাট ইফতিলাফ আছে, থাকবেই। ইখতিলাফ থাকা সত্বেও আলেম-ওলামাগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে ইসলাম বিরোধী কোন ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। তিনি বলেন, ঐক্য বিনষ্ট করা শয়তানের কাজ। শয়তান মতপার্থক্যকে বড় করে আমাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে চায়। ওলামাদের মধ্যে ঐক্য হলে ইবলিশ শয়তান কী পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা বলে শেষ করা যাবে না। সাধারণ মানুষও ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান। ওলামাগণ ঐক্যবদ্ধ হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্বীনী অনুপ্রেরণা বেড়ে যাবে। কাজেই উম্মাহর ঐক্য বিনষ্ট হয় এমন বক্তব্য থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সকল ফেতনা মোকাবেলা করে সন্তানদের সুপথে রাখা বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্তানদের বিপদগামী থেকে রক্ষার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষার কোন বিকল্প হতে পারে না। রাসুল (সা.) এর আদর্শের সাথে সন্তানদের পরিচয় করাতে পারলে তারা শ্রেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
#