প্রকাশিত হয়েছেঃ অক্টোবর ১৯, ২০২১ সময়ঃ ১২:৫৬ অপরাহ্ণ
আসাদুজ্জামান ভালুকা (ময়মনসিংহ),১৯ অক্টোবরঃ
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ক্ষেতে পাতা মোড়া ও বিএলবি’র আক্রমনে ধান মরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কৃষি বিভাগের অবহেলা ও মাঠ পযার্য়ে পরামর্শ না পাওয়ায় পোকার আক্রমন থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পরেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় সব এলাকাতেই পাতা মোড়া ও বিএলবি’র আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ধান ক্ষেত হলতে ও বাদামী বর্ণ ধারণ করে ধান মওে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয় দোকান থেকে কিটনাশক কিনে ব্যবহার করেও অনেকেই সুফল পাচ্ছেন না। ডাকাতিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামে যোকাদরা বাইদে ধান মরে পাকা ধানের রং ধারন করে আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই গ্রামের কৃষক আহাম্মদ আলীর দুই কাঠা জমির ধান সম্পুর্ণ মরে গেছে। একই গ্রামের কৃষক নূর মোহাম্মদ জানান, তিনি ১১ কাঠা জমিতে রঞ্জিত জাতের আমন আবাদ করেছেন। তার ক্ষেতে ধান গাছের গোড়ায় ছোট পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। তারা এটিকে কারেন্ট পোকা বলে থাকেন। অসংখ্য ছোট ছোট সাদা পোকা ধান গাছের গোড়ায় রস চুষে খেয়ে ফেলায় ধানের গোছা মরে পাতা হলদে রং ধারণ করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, কৃষি বিভাগের কোন লোক এই এলাকায় আসেনি। তাই স্থানীয় দোকানীর পরামর্শে কিটনাশক এনেছেন ক্ষেতে দেয়ার জন্য। ১১ কাঠা জমি আবাদ করতে তিনি প্রায় ১০ হাজার টাকার মতো খরচ করেছেন। পোকা দমন না হলে তিনি ঘরে ফসল তুলতে পারবেন না। একই এলাকার পান্না আলীর ৪ কাঠা ক্ষেত পোকায় আক্রান্ত হলে তিনি স্থানীয় ডিলারের দোকান হতে কিটনাশক এনে ক্ষেতে দিয়েছেন। ওই এলাকার কৃষক আব্দুস সাত্তারের প্রায় ১০ কাঠা জমিতে পোকার আক্রমন দেখা দিলে তিনি ক্ষেতে কিটনাশক স্প্রে করেছেন।
বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, মাঠ পযার্য়ে কৃষি বিভাগের কোন কর্মকতার্কে দেখা যায়না। কেউ কেউ আসলেও তারা বাজারে সার-কিটনাশকের দোকানে সময় কাটিয়ে কিটনাশক কোম্পানীর লোকদের সাথে দেখা করে চলে যান। যে সকল কোম্পানীর লোকজন অফিসারদের সুবিধা দিয়ে থাকেন, তাদের ঔষধ বিক্রির জন্য দোকানদারদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
এ ছাড়াও উপজেলার হবিরবাড়ি, পাড়াগাঁও, উথুরা, ধীতপুর, রাজৈ, চামিয়াদী, ভায়াবহ ও পাঁচগাঁওসহ সর্বত্রই আমন ধানে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতার্ আবদুল্লা আল মাসুদ সংবা মাধ্যমকে জানান, তার ব্লকে চাঁনপুর, আঙ্গারগাড়া, ডাকাতিয়া হিজলিপাড়া এলাকায় আমন ধানে বিএলবি ও পাতা মোড়ানো পোকা আক্রান্ত হয়েছে। এসব দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকতার্ কৃষিবিদ জেসমিন জাহান বিভিন্ন এলাকায় পোকা আক্রমণের কথা স্বীকার করে বলেন, এ বছর ভালুকায় আমনের আবাদ হয়েছে ১৯ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি। এখানে উপসহকারী কৃষি কর্মকতার্ থাকার কথা ৩৪ জন, কিন্তু আছেন মাত্র ২১ জন। তাই সব এলাকা সমানভাবে খোঁজ খবর নেয়া সম্ভব হয়ে উঠছেনা। তারপরও আমরা সার্বক্ষনিক মাঠে থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।